সাবেক মসজিদ বাড়ি স্ট্রিটের ৪৬ নম্বর বাড়িটি ধ্রুপদী স্থাপত্য কলার কোনও ব্যাকরণই যে মানেনি, তা এক নজরে দেখলেই ঠাওর হয়। হালে চরম অপরিকল্পিত নগরোন্নয়নের শিকার কলকাতার বুকে গজিয়ে ওঠা কংক্রিটের জঙ্গলে প্রায় ‘ম্যাচ বক্স স্ট্রাকচার’ বা দেশলাইয়ের বাক্সের আদলে নিতান্তই শ্রীহীন যে সব অজস্র বাড়ি আকছার নজরে আসে, এটির আকৃতি প্রকৃতি সে ধাঁচেরই। সাবেক উত্তর কলকাতার সংকীর্ণ, সর্পিল গলি দিয়ে যেতে যেতে বাড়িটির দিকে চোখ পড়লেও মনে কোনও আলোড়ন জাগার কথা নয়। তা এতটাই বৈশিষ্ট্যহীন। পথচলতি পথিক শুধু ভাবতেই পারেন এরকম বাড়ি তো কতই আছে। তিনতলা বাড়িটির এক তলায় রয়েছে খানকতক দোকান। দোতলাটির নির্মাণ দেখলেই বোঝা যায় এটি হঠাৎ গজিয়ে ওঠা। এই অংশে ঘরগুলি প্রায় পায়রার খোপের মতো। সেই তুলনায় তিন তলার অংশটি বেশ প্রশস্ত। তবে বাড়ির পাশ দিয়ে খুবই সরু গলিতে পা রাখলে এই নির্মাণের পিছনের দিকে পুরোনো আদলের সামান্য কিছুটা ছাপ তাও চোখে পড়ে।

সব মিলিয়ে অবশ্য কোনওভাবেই বোঝার উপায় নেই যে এই বাড়িটি ছিল ভারতের নবজাগরণের অন্যতম পথিকৃৎ অক্ষয় কুমার দত্তের বাসগৃহ। কারণ এই মুহুর্তে বাড়িটির সামনে সেটির পরিচিতি সম্পর্কিত কোনো ফলক না থাকায় কালচক্রে সেটি ক্রমেই হারিয়ে গিয়েছে বিস্মৃতির অন্তরালে। উৎসাহী কোনও মানুষ নানা পথ ঘুরে যদিও বা এই চত্বরে পৌঁছন, পাড়ার পুরনো কোনও কোনও বাসিন্দা তাঁকে ‘অক্ষয়-নিবাস’ -এর সন্ধান দিতে পারেন। তবে এই প্রজন্মের অনেকেরই এই বিষয়ে কিছুই জানা নেই।
উইলই বলে দেয়, সাবেক কলকাতার উত্তরাংশে মসজিদ বাড়ি স্ট্রিটের ৪৬ নম্বর ভবনটি যে অক্ষয়কুমার দত্তের বসতবাড়ি ছিল তাতে সন্দেহ নাস্তি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অবশ্য গড়ন পেটন ছাড়াও বাড়িটির আরও পরিবর্তন হয়েছে। তা হল, ৪৬ মসজিদ বাড়িটির দুই অংশের ঠিকানা এখন ৪৬ এ এবং ৪৬ বি। আরও একটি পরিবর্তনের কথা অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে। তা হল, মসজিদ বাড়ির স্ট্রিটের এই অংশটি এখন অক্ষয় দত্ত সরণী নামেই সরকারিভাবে পরিচিত হয়েছে। কিন্তু আক্ষেপের বিষয় হল, যে মানুষটির নামে রাস্তা তাঁর বসতি এখানে ঠিক কোথায় তার দিশা মেলা খুবই দুরূহ।
যদিও খোদ অক্ষয়কুমার দত্তই তাঁর শেষ ইচ্ছাপত্র বা উইলে এই বাড়ির কথা সবিস্তারে উল্লেখ করেছিলেন। তিনি উইলে লিখেছেন, “ কখন আমার মৃত্যু ঘটে তার স্থিরতা নাই। এ নিমিত্ত আমার পুত্রাদির পরস্পর ভাবী বৈষয়িক বিবাদ নিবারণার্থে আমি কলকাতার নর্থ ডিভিজনের অন্তঃপাতি মসজিদ বাড়ি স্ট্রীট নিবাসী শ্রী অক্ষয় কুমার দত্ত স্বেচ্ছাধীন স্বচ্ছন্দ মনে এই শেষ উইল করলাম।”
উইলে যথাবিহিত তাঁর বিষয় আশয়ের বিলি বন্দোবস্তও করে গিয়েছিলেন ‘ভারতবর্ষীয় উপাসক সম্প্রদায়’– এর রচয়িতা অক্ষয় বাবু। তাতে তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, “কলিকাতা নর্থ ডিভিজনের অন্ত:পাতি মসজিদ বাড়ি স্ট্রীটস্থ আমার ৪৬ নম্বরের বাটি… আমার কনিষ্ঠ পুত্র রজনীনাথ দত্ত ও পৌত্র সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত প্রাপ্ত হইবেক।” অর্থাৎ এই উইলই বলে দেয় সাবেক কলকাতার উত্তরাংশে মসজিদ বাড়ি স্ট্রিটের ৪৬ নম্বর ভবনটি যে অক্ষয়কুমার দত্তের বসতবাড়ি ছিল তাতে সন্দেহ নাস্তি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অবশ্য গড়ন পেটন ছাড়াও বাড়িটির আরও পরিবর্তন হয়েছে। তা হল, ৪৬ মসজিদ বাড়িটির দুই অংশের ঠিকানা এখন ৪৬ এ এবং ৪৬ বি। আরও একটি পরিবর্তনের কথা অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে। তা হল, মসজিদ বাড়ির স্ট্রিটের এই অংশটি এখন অক্ষয় দত্ত সরণী নামেই সরকারিভাবে পরিচিত হয়েছে। কিন্তু আক্ষেপের বিষয় হল, যে মানুষটির নামে রাস্তা তাঁর বসতি এখানে ঠিক কোথায় তার দিশা মেলা খুবই দুরূহ।
“৪৬ নম্বর মসজিদ বাড়ি স্ট্রিটে বাস করতেন ছন্দের জাদুকর কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত (১৮৮২-১৯২২)। পিতামহ অক্ষয় কুমার দত্ত (১৮২০- ১৮৮৬) ছিলেন বাংলা সাহিত্যে বৈজ্ঞানিক যুক্তিবাদের প্রবর্তক ও ব্রাহ্ম আন্দোলনের অন্যতম নেতা। সত্যেন্দ্রনাথের মানস প্রকৃতিতে পিতামহের প্রভাব ছিল। … ১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দে সেন্ট্রাল কলেজিয়েট স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৯০১ অবধি জেনারেল অ্যাসেম্বলিস ইনস্টিটিউশনে বি.এ. পর্যন্ত পড়েন। মাতুলের আদেশে ব্যবসায় প্রবৃত্ত হন। পরে ব্যবসা ছেড়ে সাহিত্যসেবায় ব্রতী হন।”
উল্লেখ্য, গত শতকের আটের দশকে মসজিদ বাড়ি স্ট্রিটের এই অংশটির নাম বদলের প্রস্তাব ওঠে। শ্রীশ চন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ ড: সৌম্যেন সরকার মসজিদ বাড়ি স্ট্রিটের যে অংশ যতীন্দ্রমোহন এভিনিউ থেকে হরি ঘোষ স্ট্রিট পর্যন্ত প্রসারিত সেই অংশটুকু অক্ষয়বাবুর নামে নামকরণের এক প্রস্তাব বিবেচনার জন্য কলকাতা পুরসভার কাছে পেশ করেন। কলকাতার তৎকালীন প্রশাসক ৩ ডিসেম্বর ১৯৮২ সালের আদেশ বলে মসজিদ বাড়ি স্ট্রিটের এই অংশের নাম বদল করে ‘অক্ষয় কুমার দত্ত’ সরণি নামটি বলবৎ করেন।

এই নামবদলের বৃত্তান্ত তথা ঐতিহাসিকভাবে এই অঞ্চলের স্থান মাহাত্ম্যের বিস্তারিত বিবরণটি মেলে কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন বরিষ্ঠ আমলা ও পুরনো কলকাতার ইতিবৃত্তের অন্যতম ক্ষুরধার বিশ্লেষক অজিতকুমার বসুর অসাধারন এক আখ্যান থেকে। তা হল, প্রয়াত অজিতবাবুর ধ্রুপদী রচনা ” ‘কলকাতার রাজপথ:সমাজে ও সংস্কৃতিতে’। যা থেকে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মেলে। তা হল, এই বাড়িতে বাস করেছেন কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তও।
অজিতবাবু তাঁর এই বইতে লিখেছেন, “৪৬ নম্বর মসজিদ বাড়ি স্ট্রিটে বাস করতেন ছন্দের জাদুকর কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত (১৮৮২-১৯২২)। পিতামহ অক্ষয় কুমার দত্ত (১৮২০- ১৮৮৬) ছিলেন বাংলা সাহিত্যে বৈজ্ঞানিক যুক্তিবাদের প্রবর্তক ও ব্রাহ্ম আন্দোলনের অন্যতম নেতা। সত্যেন্দ্রনাথের মানস প্রকৃতিতে পিতামহের প্রভাব ছিল। … ১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দে সেন্ট্রাল কলেজিয়েট স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৯০১ অবধি জেনারেল অ্যাসেম্বলিস ইনস্টিটিউশনে বি.এ. পর্যন্ত পড়েন। মাতুলের আদেশে ব্যবসায় প্রবৃত্ত হন। পরে ব্যবসা ছেড়ে সাহিত্যসেবায় ব্রতী হন।”
সত্যেন্দ্রনাথ ছিলেন ভারতী পত্রিকা গোষ্ঠীর অন্যতম কবি। সাহিত্য পত্রিকায় তাঁর প্রথম জীবনের কয়েকটি রচনা প্রকাশিত হয়। রবীন্দ্রযুগের খ্যাতিমান কবি হয়ে রবীন্দ্রনাথের শ্রদ্ধা অর্জন করেছিলেন। বাংলা ভাষার ধ্বনি নিয়ে নতুন ছন্দ বিজ্ঞান সৃষ্টি তাঁর কবি প্রতিভার মৌলিক কীর্তি। যার অনন্য উদাহরণ সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের দূরের পাল্লা কবিতাটি –‘…ছিপ খান তিন দাঁড় / তিন জন মাল্লা / চৌপর দিন ভোর/ দ্যায় দূর পাল্লা!…’
অজিতবাবুর সংযোজন, মসজিদ বাড়ি স্ট্রিটের এই বাড়িতেই সত্যেন্দ্রনাথের দেহান্ত হয়। ১৮৮৬ সালের ১৮ মে ৬৬ বছর বয়েসে যখন অক্ষয়বাবু প্রয়াত হন, তখন তাঁর সত্যেন্দ্রনাথের বয়স মাত্র চার বছর। পিতামহকে হোমশিখা কাব্যগ্রন্থ উৎসর্গ করে কবি লিখেছিলেন, ‘বঙ্গীয় গদ্যের গৌরবস্থল, আমার পূজ্যপাদ পিতামহ…’।
‘খগোল’ যন্ত্র হাতে গভীর রাতে ছাদে এসে আকাশ দেখা যুবকটি স্বয়ং অক্ষয় কুমার দত্ত। দূরবীন যন্ত্রের ‘খগোল’ নামটি দিয়েছিলেন তিনিই। বিজ্ঞান, গণিত, ভূগোলের ক্ষেত্রে বাংলায় এই জাতীয় আরও অনেক বৈজ্ঞানিক পরিভাষা তৈরি করেছিলেন তিনি। সে আমলে ভারতীয় উপমহাদেশে মহাকাশ বিজ্ঞানের চর্চায় যে মানুষটি ছিলেন অন্যতম পুরোধা। বস্তুত, ভারতীয় মানসে মহাকাশ-চর্চার জমিটি প্রস্তুত করে গিয়েছিলেন এই মানুষটিই।
কলকাতার এই বাড়িটিকে ঘিরে অক্ষয়কুমার দত্তের জীবনের অন্য একটি অম্ল মধুর পর্বেরও খানিক সন্ধান মেলে। সেও এক বিচিত্র আখ্যান! – রীতিমত গভীর রাতে তিনতলা বাড়ির ছাদে স্বামী বনাম স্ত্রীর দাম্পত্য কলহ বেধে গিয়েছে। স্ত্রী দুষছেন স্বামীকে, কেন তিনি ‘বউয়ের’ প্রতি তেমন মনোযোগ দেন না। দিলে তো আর স্ত্রীকে ছেড়ে গভীর রাতে বাড়ির ছাদে বসে ‘খগোল’ যন্ত্রটি চোখে লাগিয়ে আকাশে গ্রহ নক্ষত্র পর্যবেক্ষণ করতেন না। স্ত্রীর আক্ষেপ, এমন লোকের দেখা মেলা ভার যে দুই– আড়াই প্রহর রাতে স্ত্রীকে অবহেলা করে আকাশের দিকে ঠায় চেয়ে থাকে। স্ত্রীর ভৎর্সনা সত্ত্বেও যুবকটি কিন্তু নাচার। কারণ, আকাশ জুড়ে মহাজাগতিক যে ঘটনা তা দেখা বা বোঝার জন্য যে রাতের আঁধার ছাড়া যে আর কোনও গত্যন্তর নেই। অভিমানী স্ত্রীর বকাঝকা সত্ত্বেও স্বামী কিন্তু তেমন অস্থির হননি। নিতান্ত শান্তভাবেই তিনি বলেছিলেন, “এমন লোকের স্ত্রী এরূপ কথা বলে তা যে আরো বিড়ম্বনার।”
আসলে ‘খগোল’ যন্ত্র হাতে গভীর রাতে ছাদে এসে আকাশ দেখা যুবকটি স্বয়ং অক্ষয় কুমার দত্ত। দূরবীন যন্ত্রের ‘খগোল’ নামটি দিয়েছিলেন তিনিই। বিজ্ঞান, গণিত, ভূগোলের ক্ষেত্রে বাংলায় এই জাতীয় আরও অনেক বৈজ্ঞানিক পরিভাষা তৈরি করেছিলেন তিনি। সে আমলে ভারতীয় উপমহাদেশে মহাকাশ বিজ্ঞানের চর্চায় যে মানুষটি ছিলেন অন্যতম পুরোধা। বস্তুত, ভারতীয় মানসে মহাকাশ-চর্চার জমিটি প্রস্তুত করে গিয়েছিলেন এই মানুষটিই।
জীবনের উপান্তবেলায় কলকাতার পাট উঠিয়ে অক্ষয়কুমার দত্ত চলে যান বালিতে। সেখানেই দেওয়ান গাজী এলাকায় গঙ্গার ধারে প্রায় চারশ কাঠা জমির উপর তিনি বানান তাঁর সাধের ‘শোভনোদ্যান’। সেখানে দেশ বিদেশ থেকে নানা গাছ আনিয়ে নিজে হাতে তৈরি করেছিলেন এক মিনি বোটানিক্যাল গার্ডেন। চরম শারীরিক অসুস্থতার মধ্যেও নানা পুরাবস্তু, জীবাশ্মের এক অসাধারন সংগ্রহশালা বানিয়েছিলেন তিনি। উইলে এই বাড়িটিও তিনি দিয়ে গিয়েছিলেন পুত্র রজনীনাথ ও পৌত্র সত্যেন্দ্রনাথকে। সেই ভবনটিও এখন কালের কষাঘাতে এক খন্ডহরে পর্যবসিত হয়েছে। প্রথম শ্রেণির হেরিটেজ ভবনের স্বীকৃতি সত্ত্বেও সেই বাড়ি ও জমি এই মুহূর্তে ণপুরোপুরি বেদখল’ হয়ে যেতে পারে বলেই আশঙ্কা করছেন স্থানীয় মানুষ। তাঁরা চিন্তিত বাড়িটির ভগ্নদশার মধ্যেও যেটুকু কাঠামো এখনও টিকে রয়েছে, তাও বুলডোজারের ধাক্কায় মাটিতে মিশে যাবে। এখানে রাতারাতি গড়ে উঠবে আকাশছোঁয়া বহুতল, শপিং মল, মাল্টিপ্লেক্স ইত্যাদি।

তবে এই পরিস্থতিতেও বালির এক বড় অংশের মানুষ চেষ্টা চালাচ্ছেন সর্বসাধারণের মনে অক্ষয়কুমার দত্তের পূণ্য স্মৃতি যেন অক্ষয় থাকে, চির জাগরুক থাকে। তাই অক্ষয় দত্ত মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন (বালি), বঙ্গীয় সাক্ষরতা সমিতি ও পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ-এর প্রয়াসে আগামী ১৫ জুলাই অক্ষয়বাবুর ২০৫ তম জন্মদিবসে সারা বাংলা প্রশ্নোত্তর প্রতিযোগিতা ও বিশাল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হবে ১৩ জুলাই বালি মেকলে উচ্চ বিদ্যালয়ে। আর শোভাযাত্রাটি হবে ১৫ জুলাই বিকালে বালি বাস স্ট্যান্ড থেকে অক্ষয়কুমার দত্তের ঐতিহাসিক বাড়ি ‘শোভনোদ্যান’ পর্যন্ত। উদ্যোক্তাদের আশা বালিতে অক্ষয় দত্তের স্মৃতি রক্ষায় ‘দৃঢ় প্রতিজ্ঞ’ হাজার হাজার মানুষ এই শোভাযাত্রায় অংশ নেবেন।
একইভাবে সাবেক মসজিদ বাড়ি স্ট্রিট, যা হালে অক্ষয়কুমার দত্ত সরণী, তার বাসিন্দারা অনেকেই চান এখানেও যেন অক্ষয়কুমার দত্তের স্মৃতি অমলিন থাকে। এই প্রসঙ্গে কলকাতার রাজপথ বইটির লেখক অজিতবাবুর কন্যা শর্মিষ্ঠাদেবী জানান, ‘এটা একটা মধুর সমাপতন যে আমাদের বাড়িও অক্ষয়কুমার দত্ত সরণীতেই। এই বাড়িতেই আমার বাবা অক্লান্ত পরিশ্রমে দুই খন্ডে তাঁর বইটি লিখেছিলেন। আর এই রাস্তার নাম বদলেও বাবার একটা বড় ভূমিকা তিনি। সেই সময় এই নাম বদল নিয়ে অনেক বিতর্ক বেঁধেছিল। কেউ কেউ এর বিরোধিতাও করেছিলেন। যদিও বাবার যুক্তি ছিল, ঐতিহাসিক সত্যকে মর্যাদা দিতে হলে এই রাস্তার নাম অক্ষয় দত্তের নামেই রাখা উচিত।’
পেশায় শিক্ষিকা শর্মিষ্ঠার মতে, তবে এক্ষেত্রে পরবর্তী প্রজন্মেরও ভূমিকা ও দায়িত্ব রয়েছে। যা আমরা কেউই এড়িয়ে যেতে পারি না। অক্ষয় দত্তের কলকাতায় বসতবাড়ি আদতে কোথায়, তা ক’জন মানুষই বা জানেন। এই কাজটা অনেক সহজ হত, যদি ৪৬ নম্বর বাড়ির সামনে অন্তত একটা স্মৃতি ফলক কলকাতা পুরসভার তরফে বসানো হত! এটুকু তো করাই যায়।